বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধি॥ ১৫ নভেম্বর ২০০৭। এই দিনে ঘূর্ণিঝড় সিডর লণ্ডভণ্ড করে দেয় পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ উপকূলীয় এলাকা। দক্ষিণের মানুষ আজও ভোলেনি সেই ভয়াবহ ১৫ নভেম্বরের প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের তাণ্ডবের কথা।
বিধ্বস্ত বাঁধ নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকারি-বেসরকারিভাবে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও ভোগান্তি কমেনি উপকূলবাসীর। অমাবস্যা-পূর্ণিমায় বিধ্বস্ত বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এখনো গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে থাকে। আকাশে মেঘ দেখলেই সমুদ্রপাড়ের মানুষের বেড়ে চলে ছোটাছুটি।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ভয়াবহ সুপার সাইক্লোন ‘সিডর’ লণ্ডভণ্ড করে দেয় বিস্তীর্ণ জনপদ। ওই সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এসব এলাকার বেড়িবাঁধসহ অসংখ্য স্থাপনা, কৃষকের ক্ষেত ও মৎস্য সম্পদ। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সড়ক, বিদ্যুৎসহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝড় ও ঝড়ের পরবর্তী সময়ে রোগ বালাইয়ে মারা গেছে বহু গবাদিপশু।
সিডরে এ উপজেলায় ৯৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় এক হাজার ৭৮ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৮ জেলে। স্বজন হারাদের কাছে তাদের খোঁজখবর নিতে গেলে তারা বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা জীবনে এই দিনটির কথা ভুলতে পারবেন না।
ক্ষতিগ্রস্ত ৪ হাজার ৪৪০টি পরিবারকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা পাকা ও আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে।
উপজেলার লালুয়ার চারিপাড়ার বাসিন্দারা জানান, রাবনাবাদ পাড়ের এসব জেলে পরিবারের জোয়ার নিত্যদিনের জলোচ্ছ্বাসে পরিণত হয়েছে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন। এরা বেড়িবাঁধের বাইরে ঝুপড়ি তুলে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, এখনও বেড়িবাঁধের বাইরে কমপক্ষে ৭ হাজার পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালি উজ্জামান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজে হাতে নেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, গৃহহীন, হতদরিদ্র মানুষকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩০ পরিবারকে গৃহপুনর্বাসন করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ উপজেলায় আরও ৪৫০ হতদরিদ্র পরিবারকে গৃহপুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া আবাসন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্য দিয়েও মানুষকে আবাসন পুনর্বাসন করা হচ্ছে।
Leave a Reply